Desh Matar Kache Chithi | Lyrics | Shohortoli

Desh Matar Kache Chithi

Desh Matar Kache Chithi | Shohortoli
সংলাপ:: 

"কি-রে, এত রাত্রে ফোন দিছস কেন?  

__"আজ ইউনিভার্সিটিতে কি হলো দেখলি? কাদেরকে হল থেকে মারতে মারতে বের করে দিলো, অথচ কেউ কিছু বললো না"!

"আরে ব্যাটা, মানুষের জানের ভয় আছে না, প্রতিবাদ কইরা খালি খালি হলের সিটটা হারায় আর-কি! যা, রাইত হইছে ঘুমা, চাচা আপন প্রান বাঁচা"
মা,
এখন মাঝরাত, আমি জানি তুমি আমাদের মত ঘুমাও নি।
একটা সময় ছিলো, যখন তুমি রাতে বিশ্রাম নিতে;
এখন আর সেই ফুরসত কই?
তোমার বুকে ২৪ ঘন্টাই যে ঘোরে অর্খনীতির চাকা!
তাই এই অসময়েই তোমাকে স্মরণ করছি। 
মা,
৯ মাসের অবিচল ধৈর্য্য ও উত্তাল বেদনার পরই
তো তুমি ‘মা'।
শৈশবে যে শিশু উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতো,
যৌবনে প্রাচুর্যের মোহে সে লাগামহীন টাট্টু ঘোড়া;
বেয়াড়াপনা তার রন্ধ্রে-রন্ধ্রে।
দু'দশক আগে, এটাকে বোধ হয় দুষ্টুমি বলা যেতো, 
কিন্তু এখন, কিন্তু এখন নষ্টামি বলা ছাড়া, আর কোনো গতি দেখছি না। 
তোমার প্রসব বেদনার ক'বছর আগে 
যে ধ্বনি বা বর্ণমালার জন্য জীবন হারিয়ে শহীদ পেলাম; 
সেই সালাম, বরকত, রফিক জব্বারের রক্তে ভেজা শার্ট 
যাদুঘরে না থেকে, 
ঐ শার্টের একটি সুতাও যদি আমার হৃদয়ে থাকতো, তাহলে, 
তাহলে বুলিতে যে মিথ্যা, আর ঝুলিতে যে পাপ, 
তার শাপ, কিছুটা হলেও মোচন হতো্।

রাজপথে সব প্রজারাই ছিলো, ভাষার
দাবীতে প্রানের আকুতি
শক্ত পিচে ফুল ফুটেছিলো, স্বরে_অ , স্বরে_আ , হ্রস্ব_ই
এখন ভাষার বাসা শুধু বুকে, মুখ খুজেঁ ফিরে ধুঁকে- ধুঁকে,
মুখে ফোটে ফিরিঙ্গি খই, ক- খ- গ পলাতক রই ...(x2)
সংলাপ:: 
রফিক সাহেব, ছেলেটাকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করে দিলাম, আন্তর্জাতিক ভাষায় শিক্ষিত হোক; ওসব বাংলা-টাংলা শিখিয়ে আর কি হবে? 
__ঠিকই করেছেন জামান সাহেব। এ-লেভেল পাশ করলেই আমেরিকা বা ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দিবেন। এ দেশে রেখে শুধু শুধু ছেলের ভবিষ্যত নষ্ট করবেন না-কি?


সুখ বা শোক দিবস দুটোই এখন বানিজ্যিক হায়েনার

খাদ্য, ১৬ই ডিসেম্বর বা একুশে ফেব্রুয়ারি; সবই

ফুরফুরে "হলিডে"। কনসার্ট, কনফারেন্স, সেমিনার,
সিম্পোজিয়াম, এমনকি, এমনকি সংসদ
অধিবেশন; সব এখন "স্পনসর্ড"! সার্বজনীন
পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে লাখ টাকার
আতশবাজি ফুটে; আর সেই একই অনুষ্ঠানে গলায়
প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে ভিক্ষা করে একজন যুদ্ধাহত
মুক্তিযোদ্ধা। 

যে মানচিত্রের সীমানা লাখো শহীদের রক্তের 
কালিতে আঁকা, সে সীমানায় আজো রক্ত ঝড়ে।
যে সার্বভৌমত্বের বড়াই
করে বলি "আমরা বাংলাদেশী"; সে সার্বভৌমত্ব
কেনা-বেচা হয় আন্তর্জাতিক মীমাংসার টেবিলে।
"কূট" এর সাথে "নীতি" যায়না বলেই বোধ হয়,
কূটনীতি না বলে সবাই "ডিপ্লোমেসি" বলতেই
স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আর প্রতিনিয়ত নিজের
সাথে প্রতারনা করা জনগন বোঝেনা যে পাঁচ বছর
পর-পর তারা একই ভুল করে। থোড়-বড়ি-খাড়া আর খাড়া-
বড়ি-থোর; বার বার খাল কেটে কুমির
আনা কবে শেষ হবে তোর?

প্রচারনাতেই প্রসার, "আর্ট"-এ শুধু টাকার কালচার,
স্বাধীনতা হলো পন্য, বিলবোর্ড- প্ল্যাকার্ডে রঙের বাহার।
আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দেশটা এখন পাশার
বোর্ডে…
ষোলো কোটি জনতা, পিঠ বাঁচিয়ে নিজেরা বাঁচে।
ষোলো কোটি জনতা, পিঠ বাঁচিয়ে নিজেরা বাঁচে।

সংলাপ::
আপনি যে প্রশ্নটি করেছেন তা অর্থনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোন থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। দেখুন আমাদের সময়ে কিন্তু এমনটি হয়নি। গনতন্ত্র এবার জাগবেই, এ ম্যাসাকার বন্ধ হবেই…: 
__আরে রাখেন আপনার গনতন্ত্র, দেশের আইন- শৃংখলা পরিস্থিতি এখন অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো। দেশের মানুষ এখন যে শান্তিতে আছে, তা তো আমেরিকার মানুষও নেই!

মা,

জানি তুমি মমতাময়ী, একটাও আগ্নেয়গিরি নেই তোমার বুকে, 

আছে কেবল জালের মত বিছিয়ে রাখা নদী। 

তোমার শোকের বহি: প্রকাশ হিসেবে সেখানে প্রায়ই চর পড়ে। 

তোমার ক্ষোভ দেখি টর্নেডোতে, ভুমিকম্পে, জলোচ্ছাসে…
তোমার কি একবারও মনে হয় না মা,
এ অস্তিত্বের কোনো মানে নেই, এই ঘর ঠিকানাবিহীন?
তোমার কি মনে হয় না, আঁতুড় ঘরেই লবন দিয়ে 
শেষ করে দেয়া উচিৎ ছিলো তোমার পথভ্রষ্ট সন্তানকে, 
মনে হয় না;
মনে হয় না "সাফারি পার্ক" থেকে জঙ্গল ভালো?
আমার তো মনে হয়, ছোট খাঁচা থেকে মুক্ত হয়ে 
আরো বড় খাঁচায় এলাম! জেলখানাতেই আছি এখনো…
এখান থেকেই চিঠিটা পোস্ট করবো, পেলে, 
পেলে উত্তর দিও…
এখানে আমৃত্যু অন্ধকার, অপেক্ষায় শুধু পারাপার
রোদের ফালি, চাদেঁর কালি, নীলাকাশের হাহাকার।
হাড়ের তুলিতে, রক্তের রঙে, যে প্রলাপ এ চিঠিতে
সেই কান শুনে নেবে, জ্বলে যে আমার দহনে।
সেই কান শুনে নেবে, জ্বলে যে আমার দহনে।

পৌছেঁ যাবে ঠিকই জেনো, তোমার আমার , পোস্টবক্সে
পৌছেঁ যাবে ঠিকই জেনো, দেশ-মাতার , ঠিকানাতে…(x2)

Credits-:-

শিরোনামঃ দেশ মাতার কাছে  চিঠি
ব্যান্ডঃ শহরতলী 
কন্ঠঃ মিশু 
আবৃতিঃ গালিব 
অ্যালবামঃ অপর পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য ।

No comments

Theme images by Petrovich9. Powered by Blogger.